কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
যে মূল দাবিতে (পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া) সিলেটে পণ্য-পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে, সেই দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে স্থানীয় বিএনপিও। কিন্তু বিএনপির অনুষ্ঠানের দিনই কর্মবিরতি ডাকতে হবে কেন? এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবি না মানায় সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার পণ্য পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। শনিবার (৫ জুলাই) সকাল থেকে এ ‘ধর্মঘট’ শুরু হয়েছে। প্রথমে ৪৮ ঘণ্টা থাকলেও রোববার (৬ জুলাই) নতুন ঘোষাণায় সেটি বাড়িয়ে ৭২ ঘণ্টায় নেওয়া হয়েছে।
রোববার (৬ জুলাই) সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, আজ সোমবার (৭ জুলাই) সিলেট সফরে আসছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিকের আমন্ত্রণে তারা সিলেট আসছেন।
তারা সোমবার দুপুরে সিলেট মহানগরের পাঠানটুলা এলাকার সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন।
পরে বেলা ২টায় সিলেট জেলা বিএনপির সিলেট বিএনপির উদ্যোগে চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ কর্তৃক নারকীয় হত্যাকাণ্ডের শিকার সিলেট জেলার সকল শহিদ পরিবারের সদস্যদের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান মহানরগরের দরগাহ গেইট এলাকার হোটেল স্টার প্যাসিফিকে অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সিলেট সফরে আসছেন- বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ডা. এ জেড এম জাহিদ, ইকবাল মাহমুদ টুকু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং যুগ্ম সম্পাদক খাইরুল কবির খোকনসহ আরও কয়েকজন।
‘ধর্মঘট’র বিষয়ে সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন- আমাদের দাবিগুলো না মানায় কর্মবিরতি ৪৮ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ২ ঘণ্টা করেছি।
বিএনপির কর্মসূচির দিনে এমন আন্দোলন-কর্মসূচি দেওয়ায় অনেকটা ক্ষুব্ধ স্থানীয় অনেক নেতাকর্মী। এমন কয়েকজন প্রশ্ন রেখে কওমি কণ্ঠকে বলেন- এই দিনে আন্দোলনের ডাক দেওয়ার উদ্দেশ্য কী? একদিন পরে দিলে কী হতো? দলের কর্মসূচির দিনে এমন ঘোষণার অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই তো?
এদিকে, ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকে সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রেবাস, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, ইমা-লেগুনা ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
রোববার সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়ছে। এতে বড় ধরনের দুর্ভোগের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন সিলেটবাসী। এ পরিস্থিতিতে সিলেটবাসী জেলা প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।