স্বামী খু ন: দিশেহারা লক্ষ্মী, পুলিশের কার্যক্রমে হতাশা

কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :

স্বামী নিপেশ তালুকদার ও ১৫ বছরের ছেলে সূর্যকে নিয়ে সুখের সংসার ছিলো লক্ষ্মী দাশের। ঘটনার দিন সকাল ১০টায় একসাথেই বাসা থেকে বের হয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী দুজন। পরে স্বামী নিপেশ তালুকদার নিজের ব্যবসার কাজে চলে যান। আর রাতে খবর পান তিনি খুন হয়েছেন।

খুনের ১০দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তিনি জানতে পারেননি- কী কারনে তার স্বামীকে খুন হতে হলো। কেঁদে কেঁদে এভাবেই বর্ণনা দিলেন ছুরিকাঘাতে খুন হওয়া নিপেশ তালুকদারের স্ত্রী লক্ষ্মী দাশ।

স্বামীর খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

২০ এপ্রিল সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের পাঁচপীরের বাজার এলাকায় অজ্ঞাতনামা হামলাকারীর ছুকিকাঘাতে খুন হন ফেরিওয়ালা নিপেশ তালুকদার (৪২)। নিপেশ সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার সুনামপুর গ্রামের সানন্দ তালুকদারের ছেলে।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে সিলেট শহরের জালালাবাদ থানার তেমুখিস্থ খালেদ মিয়ার বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।

নিপেশ প্রতিদিন বাইসাইকেলে করে বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমানভাবে লাইট, চকলেট ও সিগারেট ফেরি করে বিক্রি করতেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মালামাল বিক্রি শেষে পীরের বাজারের পশ্চিম পাশে যাওয়ার পথে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ব্যক্তি তার বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় নিপেশ দৌড়ে পাঁচ পীরের বাজারের ব্যবসায়ী আকদ্দুছ আলীর চায়ের দোকানে গিয়ে প্রাণভিক্ষা চান। স্থানীয়রা হাসপাতালে নিতে প্রস্তুতি নেওয়ার আগেই তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় ২১ এপ্রিল থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী লক্ষ্মী দাশ, (মামলা নং-৭)। এ মামলায় পৃথক অভিযানে জালালাবাদ থানার আউশা শেখেরগাও গ্রামের আব্দুল সাদিকের ছেলে কামাল মিয়া (৫২) ও জালালাবাদ থানার গুচ্ছগ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে জসিম উদ্দিনকে (৩৬) সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে ঘটনার ১০দিন পেরিয়ে গেলেও খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

লক্ষ্মী দাশ জানান, আগের দিন রাতে তার স্বামীর সাথে কোন এক ব্যবসায়ীর কাছে পাওনা টাকা নিয়ে মোবাইল ফোনে উচ্চবাচ্য কথাবার্তা হয়। এসময় ওই ব্যবসায়ী দেখে নেয়ারও হুমকি দেন। তবে, এ বিষয়ে তার স্বামী নিপেশ দাশ তাকে কোনো কিছু জানাননি।

লক্ষ্মী দাশের বড় ভাই স্বরুপ তালকদার জানান,  পুলিশ শুধু আশ্বাসই দিচ্ছে। দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না থাকায় তাদের বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই জহির ইসলাম  বলেন, এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজনের ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, এই হত্যাকান্ডের তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এ হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য উদঘাটন হবে।