কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
আজ ৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় ও মোড় ঘোরানো দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে তৎকালীন সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এবং রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করেন অস্থায়ী সরকারের হাতে। তাঁর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দীর্ঘ নয় বছরের স্বৈরশাসনের, আর দেশ ফেরে গণতন্ত্রের পথে।
এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক আইন জারি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন। পরবর্তী বছরগুলোতে তার শাসনের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বিপুল গণআন্দোলন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বিভিন্ন বামপন্থি রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষ এক হয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। এই আন্দোলনে ডা. শামসুল আলম খান মিলন, নূর হোসেনসহ অসংখ্য বীর শহীদ তাদের জীবন উৎসর্গ করেন।
১৯৯০ সালের ২১ নভেম্বর আন্দোলন যখন সর্বোচ্চ তীব্রতায় পৌঁছায়, তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল, বিএনপির নেতৃত্বে সাত দল এবং ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের নেতৃত্বে পাঁচটি বামপন্থি দল মিলে যৌথভাবে একটি রাজনৈতিক রূপরেখা ঘোষণা করে। যদিও জামায়াতে ইসলামী এই তিন জোটের বাইরে ছিল, তবুও তারা সক্রিয়ভাবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্বৈরশাসকের পতন ঘটলেও তিন জোট ঘোষিত রূপরেখার পূর্ণ বাস্তবায়ন এখনো পুরোপুরি হয়নি। কার্যকর সংসদ ব্যবস্থা, আইনের শাসন, নাগরিকের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও টেকসই গণতন্ত্র—এই বিষয়গুলো নিয়ে এখনও রয়েছে নানা প্রশ্ন ও বাস্তবায়নের ঘাটতি।
দিনটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে পালন করে থাকে। বিএনপি দিবসটিকে পালন করে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবে।
এ উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটি বাণী দেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ নয় বছরের দৃঢ় সংগ্রামই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকে সফলতার মুখ দেখিয়েছে। তারেক রহমানের ভাষায়, ‘দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ’৯০-এর ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তির কাছে স্বৈরশাসন পরাজিত হয় এবং গণতন্ত্র মুক্ত শ্বাস নিতে সক্ষম হয়।’