লাফ দিয়ে বাড়লো পেঁয়াজের দাম!

কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :

সারা দেশের বাজারে একদিনে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অপরদিকে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানির অনুমতি না দেওয়ায় সিন্ডিকেট করে একটি চক্র কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে। তবে এটা সাময়িক। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসছে, কৃষকের হাতের পুরোনো পেঁয়াজ ছেড়ে দিলে দুয়েক দিনের মধ্যেই বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

আমদানিকারকরা বলছেন, বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। কৃষকের স্বার্থের কথা বলে তারা আমদানির অনুমতি দিচ্ছেন না। এতে সাধারণ ভোক্তাদের ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। আমদানির অনুমতি দিলে দাম ৪০-৫০ টাকায় নেমে আসবে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকদিন আগেও যে পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৯৫ থেকে ১১০ টাকায় পাওয়া যেত, গতকাল তা ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এমনকি পাইকারি বাজারেই ভালো মানের পেঁয়াজের পাল্লা (পাঁচ কেজি) এখন ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, তিন-চারদিন ধরেই সরবরাহ কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে ছিল। তবে দুদিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারেই ৩০ টাকার মতো বেড়েছে । পাইকারি বাজারে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফা দাম বেড়ে ৭০০ টাকা পাল্লা বিক্রি হয়েছে। এরপরও আড়তে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। দাম আরো বেড়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, পাইকারি বাজারেই পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে। আড়তদাররা বলছেন, সরবরাহ নেই তাই দাম চড়া। এ অবস্থা বজায় থাকলে চলতি সপ্তাহেই ২০০ টাকায় পৌঁছতে পারে পেঁয়াজের দাম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরবরাহ সংকটে দাম বাড়ছে। পাইকারদের কাছেও পর্যাপ্ত পেঁয়াজ নেই।

আমদানিকারকরা বলছেন- বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। কৃষকের স্বার্থের কথা বলে তারা আমদানির অনুমতি দিচ্ছেন না। এটা খুবই দুঃখজনক। সিন্ডিকেটচক্রের সঙ্গে তাদের গোপন আঁতাত আছে। এ কারণে সাধারণ ভোক্তাদের ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় পেঁয়াজ কিনে খেতে হচ্ছে। আমদানির অনুমতি দিলে একদিনের মধ্যে দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকায় নেমে আসবে।

তবে আমদানিকারকদের এ ধরনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) ড. জামাল উদ্দীন বলেন- সাহস থাকলে তারা এটা প্রমাণ করুক। প্রকৃতপক্ষে বাজারে সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। আমদানির অনুমতি দিতে সরকারকে বাধ্য করতেই সিন্ডিকেটচক্র কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে। এখনো মার্কেট প্রসেস এবং কৃষকের হাতে এক লাখ টনেরও বেশি পুরোনো পেঁয়াজ আছে।

তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা অতিক্রম করলে আমদানির সিদ্ধান্ত আগে থেকেই হয়ে আছে। ফলে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হতে পারে।


(মূল রিপোর্ট : আমার দেশ)