কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
গাজা অভিমুখে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মূল বহরের শেষ নৌযানটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানটির নাম দ্য ম্যারিনেট।
ফ্লোটিলা আয়োজকদের লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা ম্যারিনেটে উঠে অধিকারকর্মীদের ঘিরে ফেলেন। এই নৌকায় মোট ছয়জন অধিকারকর্মী ছিলেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, দ্য ম্যারিনেটসহ ইসরায়েলি সেনারা মোট ৪৪টি নৌযান আটকে দিয়েছে। আটক করেছে প্রায় ৫০০ অধিকারকর্মীকে। গতকাল বৃহস্পতিবার তারা ৪৩টি নৌযান আটকে দেয়। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মূল বহরের একমাত্র সক্রিয় নৌযান ছিল ম্যারিনেট।
শুক্রবার ভোরে ম্যারিনেট ভূমধ্যসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ছিল। গাজার জলসীমা থেকে তখন এটির দূরত্ব ছিল প্রায় ৮০ কিলোমিটার। ম্যারিনেটের বিষয়ে একটি সতর্কবার্তায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের ও অবরোধ ভাঙার চেষ্টা অবশ্যই প্রতিহত করা হবে।
এদিকে, গাজার উদ্দেশ্যে যাওয়া মানবিক সহায়তাকারী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকের ঘটনায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজ আটকের ঘটনা আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে ঢাকা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
অবিলম্বে ইসরায়েলকে নিঃশর্তভাবে আটক সব মানবিক সহায়তা কর্মী ও অ্যাক্টিভিস্টদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলছে, অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধ ও মানবিক অবরোধ তুলে নিতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মানবিক সহায়তা বহনকারী নৌবহরটি ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বৈশ্বিক সংহতির প্রতিনিধিত্ব করে। ইসরায়েলি বাহিনীর উচিত গাজায় বেসামরিক জনগণের জন্য বাধাহীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ এই চরম দুর্দশা ও ভোগান্তির সময়ে ফিলিস্তিনের জনগণের সঙ্গে অবিচল সংহতি বজায় রাখার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
প্রায় ৪৫টি জাহাজ নিয়ে গঠিত ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহর গত মাসে স্পেন থেকে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকারকর্মীরা রয়েছেন। তাদের মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও আছেন। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধ ভাঙাই ছিল এই নৌবহরের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি যুদ্ধে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত বুধবার থেকেই ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার বহরে থাকা নৌযান আটক করতে শুরু করে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শত মত মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের বহনকারী গাজা অভিমুখী ফ্লোটিলার ৪৫টি জাহাজের প্রায় সবগুলোই আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই মানবাধিকার কর্মীরা ইসরায়েলের আরোপিত গাজার সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছিলেন।