নরসিংদীতে বিএনপির দু’গ্রুপে সং ঘ র্ষ, যুবদল নেতা নি হ ত

কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :

নরসিংদীর চরাঞ্চল আলোকবালীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে আলোকবালীর মুরাদনগর গ্রামে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী ও বহিষ্কৃত সাবেক সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম সরকার অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত সাদেক মিয়া (৪২) মুরাদনগর গ্রামের রূপ মিয়ার ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার ঘনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। গত ১২ দিনের ব্যবধানে এ নিয়ে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে মহিলাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার ও বালু উত্তোলনের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে শাহ আলম চৌধুরী ও আব্দুল কাইয়ুম সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভোরে সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী ইদন মিয়া (৫৫) নিহত হন। পরদিন ফেরদৌসী বেগম (৪২) নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনায় কাইয়ুম মিয়া তার নিয়ন্ত্রণাধীন মুরাদনগর, বকশালীপুর, বাখরনগর ও বীরগাঁও গ্রামের প্রভাব হারান। এ প্রেক্ষাপটে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে পুনরায় চার গ্রামের দখল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাদেক মিয়া নিহত হন।

শাহ আলম চৌধুরী বলেন, বালুখেকো, খুনি ও অপকর্মের দায়ে বহিষ্কৃত আব্দুল কাইয়ুম ও তার বাহিনী নিরীহ সমর্থকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। সে আওয়ামী লীগের দোসর ও সুবিধাভোগী। আমার দলে কোনো আওয়ামী লীগ কর্মী নেই। বরং কাইয়ুম আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মিলে একের পর এক খুন ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বিষয়টি আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছি।

অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল কাইয়ুম সরকার বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদ উল্লাহ ও সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিপুসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এখন পর্যন্ত আমার দুইজন কর্মী নিহত হয়েছেন। আসাদ উল্লাহ ও দেলোয়ার দিপুকে গ্রেপ্তার করলে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আরএমও ফরিদা গুলশানারা কবির জানান, হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিহত একজনকে আনা হয়েছে। আহত অবস্থায় আরও কয়েকজনকে আনা হয়েছে।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক বলেন, আলোকবালীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত ও তিনজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। কোন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে যমুনা টিভি নরসিংদীর স্টাফ রিপোর্টার হামলার শিকার হন। সংঘর্ষ ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।