কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুলিতে এক চোখ হারানো সিলেটের আলাল আহমদের অন্য চোখটিও হারাতে বসেছেন। বর্তমানে চোখের পাশাপাশি হার্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গভীর সংকটে থাকা এই তরুণের কণ্ঠে এখন দীর্ঘশ্বাস। চেয়েছেন সরকারের সুদৃষ্টি।
সিলেট মহানগরে চারাদিঘীরপাড় (আল-আমিন-৬৪) এলাকার মৃত হাবিবুল্লাহের ছেলে আলাল আহমদ (৪৬) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মাঠে ছিলেন। সে সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তার বাম চোখের কর্নিয়া ও রেটিনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুই দফা অস্ত্রোপচারেও চোখটি রক্ষা করা যায়নি। এখন ডান চোখেও অন্ধকার নেমেছে।
চোখের সমস্যা নিয়ে সিলেট এবং ঢাকা ছোটাছুটি যেন নিয়মিত বিষয়। মাসের বেশীরভাগ সময় কাটে ডাক্তারের চেম্বারে। দীর্ঘ এই ছোটাছুটিতে তিনি অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। সাথে রয়েছে আর্থিক সীমাবদ্ধতা। এই দু:শ্চিন্তায় গত পনের দিন ধরে হার্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ছুটে গেছেন ঢাকায়।
আলাল জানান- আহত হওয়ার পর থেকে অনেকেই দূরে সরে গেছেন। এখন আর আগের মতো কেউ খবরও নেন না। অনেক প্রতিকূলতার পরও চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এই চিকিৎসা যথেষ্ট নয়। দেশের বাইরে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারলে হয়তো তাড়াতাড়ি সুফল পাওয়া সম্ভব হতো। এক চোখ হারানোর পর বিভিন্ন প্রতিবন্ধকার কথা জানালেন আলাল।
তিনি বলেন- ‘চোখ হারিয়ে শুধু আলো না, হারিয়েছি অনেক কিছু। যেদিকে তাকাই, অন্ধকার দেখি। তার মধ্যে হার্টেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন কোনদিকে যাবো-ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। সরকার সুদৃষ্টি দিলে হয়তো আমার এই অবস্থা হতো না।'
আলাল দুঃখ-ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন- আমার পরিবার কঠিন সময় পার করছে। সন্তানের সুচিকিৎসা হচ্ছে না। এ অবস্থায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বর্তমান সরকার কি পারে না, একজন জুলাই-যোদ্ধা আলাল ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে?
(মূল রিপোর্ট : সিলেটের ডাক)