কওমি কণ্ঠ রিপোর্টার :
সিলেটের স্বনামধন্য ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দি সিলেট খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ (এসকেআইএসসি) অবশেষে তিনজন সিনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে আগামী রোববার (৩১ আগস্ট) থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সিনিয়র শিক্ষক মুজিবুর রহমানকে প্রিন্সিপাল ইনচার্জ এবং আবেদা ইসলাম ও মো. রোকন উদ্দিনকে ভাইস প্রিন্সিপাল ইনচার্জের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল না থাকায় ২৬ আগস্ট থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
মিটার রিচার্জ না করায় বুধ ও বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটিতে ছিলো না বিদ্যুৎ। বৃহস্পতিবার বেশি ভোগান্তি পোহান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিদ্যুৎ না থাকায় দেখা দেয় পানিরও সংকট। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন অভিভাবকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা শুরু করেন বিক্ষোভ। পরিস্থিতি অবহিত করা হয় সিলেট প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের।
খবর পেয়ে সেখানে যান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নুরে জামান। এসময় তাঁর গাড়িকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করেন নুরে জামান। পরে এডিসি (শিক্ষা) তিনজনকে প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগের মৌখিক নির্দেশনা দেন। এ ঘোষণার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
নিয়ম অনুযায়ী সিলেটের জেলা প্রশাসক প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। জেলা প্রশাসকের পক্ষে এডিসি (শিক্ষা)-র প্রতিষ্ঠানের দেখভাভ করেন।
এডিসি (শিক্ষা) নুরে জামান জানান, খবর পেয়ে আমরা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং ৩ জনকে প্রিন্সিপাল ইনচার্জ ও ভাইস প্রিন্সিপালের দায়িত্ব মৌখিকভাবে দেই। ফলে আশা করছি প্রতিষ্ঠানটিতে আর অচলাবস্থা থাকবে না।
উল্লেখ্য, স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে অচলাবস্থার সৃষ্টি করে গেছেন সিলেটের সদ্যসাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। যাওয়ার আগমুহুর্তে তিনি ‘নিয়ম’ দেখিয়ে প্রিন্সিপাল ইনচার্জকে পাঠিয়ে দেন অবসরে। তবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে যাননি।
এছাড়া সাবেক ডিসি সংশ্লিষ্ট কাগজে স্বাক্ষর না করার কারণে বিলের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকে খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে নেই বিদ্যুৎ।
এ বিষয়ে ‘সদ্য অবসরে যাওয়া’ প্রিন্সিপাল ইনচার্জ রাজকুমার সিং বুধবার কওমি কণ্ঠকে বলেন- ‘কয়েক দিন আগে এখানে আমার দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে সর্বশেষে ট্রাস্টি মিটিংয়ে সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়- পরবর্তী ট্রাস্টি মিটিং পর্যন্ত যাতে আমি দায়িত্ব পালন করে যাই। কিন্তু সদ্যসাবেক সিলেটের ডিসি মহোদয় যাওয়ার আগে আমাকে অবসর নিতে নির্দেশ করেন। কাকে দায়িত্ব দিয়ে যাবো- আমি এমন প্রশ্ন তুললে জেলা প্রশাসকের পক্ষে আমাকে বলা হয়, কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি এমনিই চলে যান। পরে ২১ আগস্ট আমি দায়িত্ব ছাড়ি। তবে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ট্রাস্টি মিটিং ছাড়া সেটি সম্ভবও নয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত: এখন অভিভাবকহীন।’