কওমি কণ্ঠ ডেস্ক :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা বাগানে ২০ টাকা প্রবেশ ফ্রি চালু করার নির্দেশনা দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, ইউরোপে টিউলিপ ফুলের বাগান দেখতে ২৫ ইউরো ফি দিতে হয়। বাংলাদেশের অনেক পর্যটক শ্রীমঙ্গলের চা বাগান দেখতে এসে পনেরো-ষোলো হাজার টাকায় ফাইভ স্টার হোটেলে থাকেন, তাদের ২০ টাকা ফি দিয়ে চা বাগান দেখতে সমস্যা কি? চা বাগান দেখার এই প্রবেশ ফি চালুর উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, এই অর্থ চা শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করা যেতে পারে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে শনিবার (১৭ মে) সকালে শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সভা কক্ষে চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, চা শিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রপ্তানিখাত, যা এক সময় পূর্ব পাকিস্তানের একমাত্র রপ্তানি পণ্য ছিল। এই শিল্পকে ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না। শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া পূরণে শ্রমিক-মালিক-সরকারের ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে এই খাতের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে কাজ করা হবে। তিনি বলেন, চা শিল্পের উন্নয়ন, ও অসন্তোষ দূর করতে ও তাদের দাবি পূরণে শ্রম, অর্থ, বাণিজ্য, শিল্প, কৃষি ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
শ্রম সচিব এএইচ এম সফিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ওমর মো. ইমরুল মহসিন, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুস সামাদ আল আজাদ, অতিরিক্ত মহা পরিচালক শাহ আব্দুল তারিক, শ্রম কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসলাম উদ্দিন, চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি পঙ্কজ কন্দ, চা শ্রমিক নেতা, বিজয় বুনার্জি, পরিমল সিং বাড়াইক, জুড়ি ভ্যালির সহসভাপতি শ্রীমতি বাউড়ি, চা শ্রমিক নারী ফোরামের আহ্বায়ক গীতা রাণী কানু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের বেতন, স্যানিটেশন, ভূমি অধিকারসহ নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এসময় শ্রম উপদেষ্টা চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নে সরকারের নানা উদ্যেগের কথা উল্লেখ করে বলেন, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে ও মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করছে সরকার। চা শ্রমিকদের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।
একজন চা শ্রমিকনেতা উপদেষ্টাকে জানান, ফুলতলা চা বাগান মালিক ১৪শ শ্রমিকের ৬ মাসের বেতন বকেয়া রেখে বিদেশে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপদেষ্টা তাকে খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।